আগামী ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আনুষ্ঠানিকভাবে এদিন শুরু হবে দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব পরমাণু ক্লাবের ৩২তম দেশ (নিউক্লিয়ার নেশন) হিসেবে আক্ষরিক অর্থে যুক্ত হবে বাংলাদেশ। গত ৪ নভেম্বর আণবিক শক্তি কমিশনকে (বিএইসি) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নকশা ও নির্মাণকাজের লাইসেন্স প্রদান করে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিএইআরএ)। ওই লাইসেন্স প্রাপ্তির মাধ্যমে দেশের প্রথম ও একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের মূল নির্মাণকাজ শুরুর আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। সে দিনই বিশ্ব পরমাণু ক্লাবে যুক্ত হওয়ার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ। অর্থের বিচারে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় রাশিয়ার পরমাণু সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। এ ধরনের নির্মাণকাজের উদ্বোধনকে সাধারণত ‘ফার্স্ট কংক্রিট-পোরিং ডে’ (এফসিডি) বলা হয়। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন এ অনুষ্ঠানকে ‘প্রথম কংক্রিট ঢালাই’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ও তাদের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রূপপুরে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করতে এখন থেকেই প্রস্তুতিমূলক কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। গ্রিড সাবস্টেশন, চারটি নতুন গ্রিড লাইন, গোপালগঞ্জ থেকে পদ্মা নদী পেরিয়ে ঢাকায় সঞ্চালন লাইন আনতে টাওয়ার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)। প্রকল্প এলাকায় রেলওয়ের অব্যবহৃত জমি প্রকল্পের প্রয়োজনে বরাদ্দ দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে প্রকল্পের ইকুইপমেন্ট আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কর মওকুফের প্রক্রিয়া করা হয়েছে। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পের জন্য আরও ১৯০ একর খাস জমি বরাদ্দের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প বিবেচনায় দ্রুত কাজ করে যাচ্ছে। রূপপুর প্রকল্পের কাজ আনুষ্ঠানিক শুরুর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান আমাদের সময়কে বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাপার নয়, এটা দেশের জন্য একটি গৌরবের বিষয়। বহির্বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হওয়ার বিষয়। রাশিয়ার দেওয়া প্রকল্প ব্যয়ের ৯০ শতাংশ সরবরাহ ঋণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পে রাশিয়ার উদ্ভাবিত সর্বাধুনিক (থ্রি প্লাস জেনারেশন) ‘ভিভিইআর ১২০০’ প্রযুক্তির পারমাণবিক চুল্লি ব্যবহার করা হবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস